হাদির মরদেহের অপেক্ষায় শাহবাগে বাড়ছে ভিড়

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৩৫ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫
হাদির মরদেহের অপেক্ষায় শাহবাগে বাড়ছে ভিড়/ছবি-জাগো নিউজ

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির নিহতের ঘটনায় বিচার দাবিতে শাহবাগে চলমান বিক্ষোভ জনসমাগম আরও বাড়ছে। হাদির মরদেহ ঢাকায় পৌঁছানোর অপেক্ষায় শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে সন্ধ্যার দিকে আরও বেশি মানুষ জড়ো হচ্ছেন। সময় যত গড়াচ্ছে, ততই বাড়ছে ভিড়।

ইনকিলাব মঞ্চ জানিয়েছে, শহীদ ওসমান হাদিকে বহনকারী বিমানটি সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে সর্বসাধারণের সাক্ষাতের জন্য তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে আনা হবে।

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ মিছিল নিয়ে শাহবাগে আসতে থাকেন। দিনভর লোকসমাগমে পুরো শাহবাগ চত্বর ভরে যায়। বিক্ষোভকারীরা ঘোষণা দিয়েছেন, শহীদ ওসমান হাদির মরদেহ ঢাকায় পৌঁছানো পর্যন্ত তারা শাহবাগ মোড় ছাড়বেন না।

বিক্ষোভকারীদের দাবির মধ্যে রয়েছে, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পদত্যাগ।

শাহবাগ থেকে মৎস্য ভবনমুখী সড়কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সদস্যরা একটি ট্রাকের ওপর অবস্থান নেন। সেখান থেকেই ডাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) সাদিক কায়েম স্লোগানের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে ঘটনার জবাব চান এবং বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায় তাকেই নিতে হবে।

একই সময়ে জুলাই ভাস্কর্যের পাদদেশে জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের সদস্যদেরও বড়ো আকারের অবস্থান নিতে দেখা যায়। পুরো শাহবাগ যেন পরিণত হয়েছে প্রতিবাদের এক বিশাল সমাবেশে।

হাদির মরদেহের অপেক্ষায় শাহবাগে বাড়ছে ভিড়

বিক্ষোভ চলাকালে আন্দোলনকারীরা একের পর এক স্লোগান দেন, ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘গোলামি না আজাদি, আজাদি-আজাদি’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা-ঢাকা’, ‘হাদি ভাই মরলো কেনো-ইন্টেরিম জবাব দে, আইজিপি জবাব দে, জাহাঙ্গীর জবাব দে’, ‘আমরা সবাই হাদি হবো, যুগে যুগে লড়ে যাবো’।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, জুলাইয়ের পর মানুষ নিরাপদ বাংলাদেশ চেয়েছিল। কিন্তু সেই প্রত্যাশা পূরণে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতার দায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে নিয়েই পদত্যাগ করতে হবে।

এরই মধ্যে বিক্ষোভের মাঝেই শাহবাগ মোড়ে জুমার নামাজ আদায় করা হয়। নামাজ শেষে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড়ের নাম পরিবর্তন করে ‘শহীদ ওসমান হাদি চত্বর’ ঘোষণা দেন। জুমার নামাজের বয়ানে ইমাম জমিউম উদ্দীন মওলানা মাইকে এই দাবি তোলেন। পরে ডাকসুর সদস্যরাও একই ঘোষণা পুনর্ব্যক্ত করেন।

জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ নভেম্বর দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হন ওসমান হাদি। দেশে চিকিৎসার পর গত সোমবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার রাতে খবর আসে, সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।

এমডিএএ/এমআরএম/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।