ডেঙ্গুর যন্ত্রণা আমি বুঝি : অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:১৯ পিএম, ২৫ জুলাই ২০১৯

গত কয়েকদিনে দেশে ডেঙ্গু ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। রাজধানীর সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালে এখন যত রোগী ভর্তি তার বেশির ভাগই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত।

বাজেট অধিবেশনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ বিষয়ে তিনি বলেন, গত ১৩ জুন প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করি। কিন্তু সেদিনটি ছিল আমার জীবনের চরম কষ্টের। কারণ এর তিনদিন আগে অর্থাৎ ১০ জুন ডেঙ্গু জ্বরের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হই। ডেঙ্গুর যন্ত্রণা কী আমি বুঝি। আল্লাহ যেন কারো ডেঙ্গু না দেয় বলে সবার জন্য দোয়া করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) দুই দিনব্যাপী ‘গুড প্রজেক্ট ইমপ্লেমেন্টেশন ফোরাম’র সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

ডেঙ্গুর বাজে অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গুর ভয়াবহতা আমি বুঝি। এর যন্ত্রণাও বুঝি। চিকুনগুনিয়ার পরই আমি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছি। এ অসুস্থতা নিয়েই ১৩ জুন সংসদে আসি। আমার বিশ্বাস ছিল, প্রস্তাবিত বাজেটটি উত্থাপন করতে পারব। কিন্তু আমি যা ভেবেছিলাম বাস্তবতা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। অধিবেশন শুরুর আগে যখন সংসদে প্রবেশ করি তখন থেকে পরবর্তী ৭-৮ মিনিট আমি সম্পূর্ণভাবে ব্ল্যাংক ছিলাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার কোনো কিছুই মনে পড়ে না। আমি কোনো রকমে আমার আসনে বসলাম। তখন আমার কেবল মনে হচ্ছিল প্রবল এক ভূমিকম্প পৃথিবীতে আঘাত হেনেছে। সেই ভূমিকম্পের কারণেই যেন ক্ষণে ক্ষণে আমার কম্পন হচ্ছিল। আমার মনে হচ্ছিল সিট থেকে পড়ে যাচ্ছি। আমি তখন মনে মনে দোয়া পড়তে শুরু করলাম।’

মন্ত্রী বলেন, বাজেটের পাশাপাশি দেশে অর্থনৈতিক আকার বাড়ছে। আমার কথার কোনো বিচ্যুতি হয় না। গত ১০ বছরে অর্থনীতি নিয়ে যা বলেছি তাই হয়েছি। ২০৩০ সালে বাংলাদেশ ৩২তম অর্থনীতির দেশ হবে। আমরা এখন বিনিয়োগ করে যাচ্ছি, ফল এখনও পাইনি, তবে শিগগিরই পাবো।’

দেশের সার্বিক উন্নয়ন চিত্র তু্লে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে প্রভাবশালী ২০ দেশের তালিকায় আসছে বাংলাদেশ। ২০২৪ সালের মধ্যে বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে যেসব দেশ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে তার মধ্যে বাংলাদেশও থাকবে। ওই সময় বৈশ্বিক জিডিপির প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে এমন শীর্ষ ২০ দেশের তালিকায় ঢুকবে বাংলাদেশ।

মন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি আইএমএফ বৈশ্বিক অর্থনীতির যে প্রক্ষেপণ প্রকাশ করেছে সেই তথ্যের ভিত্তিতে ব্লুমবার্গ এ বিশ্লেষণ করেছে। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২৪ সাল পর্যন্ত বৈশ্বিক জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখবে চীন। চীনের অবদান থাকবে সবচেয়ে বেশি, যা ২৮ শতাংশ। এর পরই রয়েছে ভারত।

বাংলাদেশের উন্নয়নে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অবদান তুলে ধরে মুস্তফা কামাল বলেন স্বাধীনতার পর থেকে এডিবি দেশের নানা উন্নয়নে ২৫ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করেছে, আরও ১০ বিলিয়ন ডলার পাইপলাইনে আছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য পিডি (প্রকল্প পরিচালক) ও ডিপিডিদের (উপ-প্রকল্প পরিচালক) তাদের থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন ও সিঙ্গাপুর পাঠানো হবে।

এ সময় এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন পারকাশ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমেদ, ইআরডির অতিরিক্ত সচিব ফরিদা নাসরিন উপস্থিত ছিলেন। দুদিনের এই ফোরামে ভারত, ভুটান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং ইন্দোনেশিয়ার প্রকল্প বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়। এডিবির প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার ঋণে দেশে বিভিন্ন ধরনের ৫৩টি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান। এসব উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন ৫৩ প্রকল্প পরিচালক (পিডি)।

প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি অনেকটাই নির্ভর করে তাদের দক্ষতা ও স্বচ্ছতার ওপর। এ কাজে যেসব পিডি ভালো দক্ষতা দেখাচ্ছেন, সম্মেলনে তাদের পুরস্কৃত করে এডিবি।

এমইউএইচ/এএইচ/এমকেএইচ

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।